ইজতিহাদঃ একটি আরবি শব্দ যা ইসলামী আইন ও শরিয়াতের কাঠামো বিবেচনা এবং নিষ্কর্ষণের মাধ্যমে মুসলিম আলিমদের দ্বারা শরিয়াতের নতুন স্থাপনা বা ব্যাখ্যা তৈরি করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।
ইজতিহাদের মাধ্যমে, মুসলিম আলিমরা কোরআন এবং হাদিস এবং অন্যান্য ইসলামী উল্লেখগুলি বিশ্লেষণ করে এবং আধুনিক সময়ে প্রায়শই সম্প্রদায়িক, নীতিগত এবং বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলির সাথে যোগ দেয়। ইজতিহাদ মূলত আল্লাহর ইচ্ছা এবং প্রফেট মুহাম্মদ (সাঃ) এর আহ্বান এর মধ্যে একটি সামঞ্জস্য উপায় হিসেবে মমলায় এসেছে।
ইজতিহাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী সূত্র যা নতুন প্রশ্ন, চ্যালেঞ্জ এবং সময়ের পরিস্থিতি সহ্য করার সাথে সাথে আমলযোগ্য শরিয়াত নিয়ে আসার জন্য উপযুক্ত উপায় বিবেচনা করতে সাহায্য করে।
ইজতিহাদের দুটি প্রধান ধরণ আছে: “ইজতিহাদ বিল কিতাব” (প্রাচীন ইসলামী লেখা এবং উক্তির উপর ভিত্তি করে) এবং “ইজতিহাদ বিল রায়” (সাময়িক প্রশ্ন এবং পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে)।
ইজতিহাদ ইসলামী ফিকহ (আইন) এর একটি মৌলিক দিক, এবং এটি ইসলামী আইন এবং শরিয়াত ব্যবস্থাপনার মৌলিক অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়।
ইজতিহাদের শর্ত
শাইখ মুহাম্মদ বিন উছাইমীন (রহ.) বলেন: ইজতিহাদের কিছু শর্ত আছে। যেমন:
- ইজতিহাদ করার জন্য যে দলিলগুলো জানা প্রয়োজন সেগুলো জানা থাকা। যেমন- আহকাম(হুকুম) সংক্রান্ত আয়াতগুলো ও হাদিসগুলো।
- হাদিস সহিহ ও দুর্বল হওয়া সংক্রান্ত জ্ঞান জানা থাকা। যেমন- হাদিসের সনদ ও রাবীদের পরিচয় ইত্যাদি।
- নাসেখ (রহিতকারী), মানসুখ (রহিত) ও ইজমা (ঐকমত্য) সংঘটিত হওয়া বিষয়গুলো জানা থাকা। যাতে করে, কোনো কিছুকে মানসুখ বলে হুকুম না দেয় কিংবা ইজমা বিরোধী কোনো হুকুম না দেয়।
- যে দলিলগুলোর কারণে হুকুম পাল্টে যেতে পারে যেমন- তাখসিস (সীমাবদ্ধকরণ), তাকয়িদ (শর্তযুক্ত করণ) ইত্যাদি দলিলগুলো জানা থাকা। যাতে করে এগুলোর সাথে সাংঘর্ষিক কোনো হুকুম না দেয়।
- শব্দের অর্থ নির্ণয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট আরবী ভাষা ও উসুলুল ফিকহ এর যে জ্ঞানগুলো রয়েছে সেগুলো জানা থাকা। যেমন- আম (সাধারণ), খাস (বিশেষ), মুতলাক্ব (শর্তহীন), মুকায়্যাদ (শর্তযুক্ত), মুজমাল (অ-ব্যাখ্যাত), মুবায়্যান (ব্যাখ্যাত) ইত্যাদি। যাতে করে শব্দের অর্থগত নির্দেশনার দাবী মোতাবেক হুকুম দিতে পারেন।
- এমন যোগ্যতা থাকা যে যোগ্যতা দিয়ে তিনি দলিল থেকে হুকুম নির্ণয় করতে পারেন।”